বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। প্রতি বছর নানা আয়োজনে দিনটা উদযাপন করে বাঙালিরা। দিনটিতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এক হয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। কিন্তু এবারের চিত্রটা ভিন্ন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে থমকে গেছে মানুষের জীবন। বাঁচার জন্য সবাই এখন ঘরবন্দি। তাই এমন উৎসবের দিনে এবার কোথাও সাজ সাজ রব নেই।
বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন না তরুণ ক্রিকেটার মোহাম্মদ নাঈম । তাঁর মতে, জীবনে বেঁচে থাকাটাই এখন জরুরি। প্রতি বছরই এইদিনে বাইরে যাওয়া হয়। তাই এই নববর্ষের সময়টা শুধু পরিবারকেই দিতে বলছেন তরুণ এই ওপেনার।
আজ মঙ্গলবার এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপ কালে নাঈম বলেন, ‘এই দিনটা আমাদের সবার জন্য বিশেষ। তবে একটা কথা এখন মাথায় রাখতে হবে যে এখন পরিস্থিতি ভালো না। নিজেকে ও নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে হলে ঘরেই থাকতে হবে। জীবনে বেঁচে থাকলে আরো অনেক নববর্ষ পাব। আমরা সবাই আবার আগের মতো পালন করতে পারব। তাই এই নববর্ষে বাসায় থাকুন, পরিবারকে সময় দিন। পরিবারের সঙ্গে থাকাটাও একটা আনন্দ।’
করোনার কারণে খেলাধুলা বন্ধ। নেই খেলোয়াড়দের কোনো ফিটনেস কার্যক্রম। আপতত বাসায় বসেই ফিটনেস রক্ষার কাজ করে যাচ্ছেন নাঈম, ‘খেলা ও ফিটনেস কার্যক্রম না থাকায় ফিটনেস ধরে রাখাটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবুও চেষ্টা করছি পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে। বাসায় টুকটাক জিম করছি। বাসার সামনে একটু জায়গা আছে সেখানে তিনভাই মিলে ক্রিকেট খেলে থাকি। এ ছাড়া একটু রানিং করি। মায়ের সঙ্গে সময় কাটাই। মাও আমাদের জন্য এটা-সেটা রান্না করতে ব্যস্ত থাকেন।‘
এবারই প্রথম বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে স্থান পেয়েছেন নাঈম। সুযোগ পাওয়ার প্রথম বছরই মহৎ উদ্দেশ্যে দান করেছেন নিজে এক মাসের অর্ধেক অর্থ। করোনা মোকাবিলার ফান্ডে দুস্থদের পাশে দাঁড়াতে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, তরুণ এই ওপেনার নিজ এলাকার দুস্থদেরও যথা সাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন। নিজের অর্থে এখন পর্যন্ত ৮০টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
নাঈম জানান, মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোটা কতটা স্বস্থির। এ ছাড়া এই লড়াইটা আমাদের সবার জন্য বলেও ব্যাখ্যা করেন তিনি, ‘মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোটা অনেক স্বস্থির। চেষ্টা করেছি এই বিপদে যতটা সম্ভব মানুষকে সাহায্য করা যায়। সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। করোনা মোকাবিলা ফান্ডে দেওয়ার পাশাপাশি নিজে থেকে নিজ এলাকার কিছু মানুষদের সাহায্য করেছি। আমার আশে-পাশের ৮০টি পরিবারকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন ফান্ডেও কিছু দেয়ার চেষ্টা করছি।’
করোনা মোকাবিলায় সবার উদ্দেশ্যে নাঈম বলেন, ‘করোনা সারা বিশ্বে খারাপ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। অনেক মানুষ চাকরিহীন হয়ে পড়ছে। এই লড়াইটা আমাদের সবার। সবাই সবার জায়গা থেকে যদি একটু সাহায্য করেন তাহলে আমাদের আর আশে-পাশের মানুষগুলো আর কষ্ট পাবে না। সেই সঙ্গে নিজেদের খেয়ালও রাখবেন। ঠিক মতো হাত ধুবেন। আর অবশ্যই ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। ’