বলিউড অঙ্গন থেকে শোকের ছায়া যেন কাটছেই না। খ্যাতিমান অভিনেতা ইরফান খানের প্রয়াণের পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন কিংবদন্তি অভিনেতা ঋষি কাপুর। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বাইয়ের স্যার এইচএন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ঋষি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ঋষি কাপুরের স্ত্রী নীতু সিং কাপুর ও তাঁর ভাই রণধীর কাপুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
এনডিটিভির অনলাইন সংস্করণ ও বিনোদনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বলিউড বাবলের প্রতিবেদনে জানা যায়, ঋষি কাপুরের পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর খবর জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে—
‘আমাদের প্রিয় ঋষি কাপুর দীর্ঘ দুই বছর লিউকেমিয়ার সঙ্গে লড়াই করে আজ সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে আইএসটি হাসপাতালে মারা গেছেন। চিকিৎসক ও মেডিকেলের কর্মীরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সবাইকে আনন্দে রেখেছিলেন তিনি।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘ভক্তদের ভালোবাসায় বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পাওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞ ছিলেন। কান্নায় নয়, তিনি সবার হাসির মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান। এই ব্যক্তিগত দুঃসময়ের মাঝেও আমরা জানি, বিশ্ব এখন খুব কঠিন ও সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জনচলাচল ও জনসমাগমের ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আছে। তাঁর সব ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষী এবং পরিবারের ঘনিষ্ঠজনকে আমরা অনুরোধ করছি, দয়া করে নিজ ইচ্ছায় আইন মেনে চলুন।’
গতকালই কোলন ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়ে ৫৩ বছরে মারা যান বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। আর তার পরের দিনই বর্ষীয়ান অভিনেতা ঋষি কাপুরের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিনোদন অঙ্গনে।
হিন্দি সিনেমার প্রথম পরিবার, ভারতের শোম্যানখ্যাত রাজ কাপুর ও কৃষ্ণা রাজ কাপুরের দ্বিতীয় সন্তান ঋষি কাপুর। তিনি খ্যাতিমান পৃথ্বিরাজ কাপুরের নাতি। তাঁর ভাইবোন—রণধীর, ঋতু নন্দা, রিমা জৈন ও রাজিক কাপুর।
শৈশবে অভিনয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন ঋষি কাপুর। তাঁর বাবার ‘মেরা নাম জোকার’-এ (১৯৭০) শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন, যার জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে আইকনিক সিনেমা ‘ববি’-তে অভিনয় করেন ডিম্পল কাপাডিয়ার বিপরীতে। ১৯৭৪ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে পান ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।
১৯৭৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ৯২টি সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন ঋষি কাপুর। ২০০৮ সালে অর্জন করেন ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা। ১২টি সিনেমায় তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন স্ত্রী নীতু সিং কাপুর।
‘ববি’ ও ‘চাঁদনি’ সিনেমার জন্য ঋষি কাপুর বিখ্যাত। গত বছর তিনি নিউইয়র্কে ক্যানসারের চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী নীতু কাপুর এবং দুই ছেলেমেয়ে রণবীর ও রিধিমাকে রেখে গেছেন।
ঋষি কাপুরকে সর্বশেষ ২০১৯ সালে ‘দ্য বডি’ সিনেমায় দেখা গেছে। দীপিকা পাড়ুকোনের একটি সিনেমার সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন এ অভিনেতা।