চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকাসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে আবারো মাছ ধরা শুরু হয়েছে।
গতকাল রাতে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান জানান,চাঁদপুরের নদী সীমানায় জেলেদের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও করোনার কারণে গত ৯ এপ্রিল থেকে জেলায় যে লকডাউন চলছে তা নদীর সীমানায়ও বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ জেলেরা নদীতে দলবদ্ধভাবে মাছ শিকার করতে পারবেন না। সেখানেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। লকডাউনের কারণে জেলার বাইরে থেকে বা এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলার কোনো জেলে বা মাঝি জেলা বা উপজেলার নদী সীমানার ভেতর প্রবেশ বা বাইরে যেতে পারবেন না। যদি কেউ এই আইন অমান্য করে মাছ শিকার করেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লকডাউন চলার সময় নদীতে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখতে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করবে।
জাতীয় মাছ ইলিশ সম্পদ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের মতলবের ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী সীমানায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে মৎস্য মন্ত্রণালয়। ইলিশের পোনা জাটকা নিধন প্রতিরোধ কল্পে ২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা বিস্তীর্ণ নদী সীমানাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৫১ হাজার জেলে। এসব জেলেদের মধ্যে ৪১ হাজার ১৮৯ জন ইলিশ জেলেকে নিষিদ্ধ সময়ে ৪০ কেজি করে চার মাস চাল দেওয়া হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী জানান, অভিযান চলাকালে মাছ ধরা বা জাল ফেলার অপরাধে ৯৩ জন জেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা হিসেবে জেল খাটা, জাল পুড়িয়ে দেওয়া, ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। পদ্মা-মেঘনায় নিষিদ্ধ সময়ে এক হাজার জেলেকে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে রিকশা, ভ্যান, হাঁস-মুরগি ও সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।